বিনা জামানতে ৫০ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স

বিনা জামানতে নারী উদ্যোক্তাদের ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স। বিজয় প্যাকেজের আওতায় মাত্র চারদিনের মধ্যেই ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অর্থসংবাদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. কায়সার হামিদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তার কি সমস্যা থাকতে পারে সেই বিষয়গুলো আমরা দেখেছি। জামানত দেওয়ার মত কোন সিকিউরিটি না থাকায় তারা ব্যাংক লোনকে ঝামেলা মনে করে। অনেক কাগজপত্র ও বেশি সময় এবং বিভিন্ন ধরনের ইস্যুকে তারা ঝামেলা মনে করেন। তাদের পরিবারেরও খেয়াল রাখতে হয়। তাই এসব বিষয়গুলোকে যদি একসঙ্গে একটি সমাধানের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আমরা চিন্তা করে বিজয় নামের একটি প্যাকেজ নিয়ে এসেছি।

 
 

 

প্যাকেজটির সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, বিনা জামানতে চারদিনের মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকি। এখানে এক পাতার একটি আবেদনপত্র। এছাড়া পুরো পরিবারের স্বাস্থ্যকে তারা যাতে এর সাথে যুক্ত করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। তাই যে কোন সময় ডাক্তারের কাছ থেকে ফোন করে পরামর্শ নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। এখানে তারা টেলিমেডিসিন সেবা পাবে।

নারী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ব্যবসায়ীরা (নারী উদ্যোক্তা) যারা বড় হতে চায়, তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করতে চায় এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের দিকে ছুটে আসতে চায় তাদের ক্ষেত্রে খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

নারী উদ্যোক্তাদের মতো কৃষকদেরও সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড। গ্রামীণ পর্যায়ের কৃষকদের ঋণের ব্যবস্থা কিভাবে করা হয় তা জানতে চাওয়া হয় কায়সার হামিদের কাছে। তিনি বলেন- কৃষিক্ষেত্রে গরু পালনের বিষয় দিয়ে আমরা শুরু করেছি। কৃষকরা মৌসুমের আগে গরু কিনে মোটাতাজাকরণ করে সেটাকে তারা বিক্রি করে। দুইভাবে আমরা এ সেবা দিচ্ছি। প্রথমটা হচ্ছে- প্রত্যেককে গরু কিনে দিচ্ছি, নগদ টাকা দিচ্ছি না। আর একটা হচ্ছে- প্রত্যেক গরুর ইন্স্যুরেন্স করেছি।

 

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের লক্ষ্য সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি সেখানে পৌঁছাতে হলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনীতির মূল শক্তি হচ্ছে এমএমই। জনসংখ্যার বড় একটা অংশ শহরের বাইরে। তাদের অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন হবে না। ঢাকা-চট্টগ্রামের বাহিরে থেকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে কোলাবরেশন মডেলের মাধ্যমে আমরা যাচ্ছি। এটার ফলাফল বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, জনগনের সাথে যোগাযোগ করতে কোলাবরেশন মডেল দরকার। কৃষকদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রথমত সম্পর্ক থাকতে হবে। এটির সঙ্গে পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য একটি ডিজিটাল ওয়ালেট যুক্ত করা দরকার। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দরকার। এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটানো গেলেই এসব প্রজেক্টে সফলতা পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে কোলাবরেশন খুব কম হয়। যদি সত্যিকারের কোলাবরেশন করা সম্ভব তাহলে এই ধরণের ব্যবসা করা যাবে। আমরা সেই জায়গায় বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করেছি। আমাদের পার্টনার আকিজ, বাংলা ক্যাট, প্রাণিসেবা এবং বেশ কয়েকটি এনজিও। এছাড়াও আমাদের সাথে পার্টনার হিসেবে রয়েছে বড় কিছু কর্পোরেট হাউস। এছাড়া পেমেন্ট পার্টনারশিপে নগদ ও বিকাশ আমাদের সাথে রয়েছে।

 

ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল কাজের জায়গা হচ্ছে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কারণ হচ্ছে- ঋণের সঠিক ব্যবহার হয় না। অনেক সময় এসএমই’র নামে লোন নিয়ে ঋণ গ্রহীতা জমি কেনেন। ঋণ নেয়ার কারণ এবং গ্রহীতার তথ্য নিশ্চিত করতে পারলে ঋণ খেলাপি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। দেশে বেশিরভাগ বড় ঋণ খেলাপি হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে কেওয়াইসি নিশ্চিত না হওয়া এবং গ্রহীতার সদিচ্ছা না থাকা, ব্যবসার নামে টাকা সরিয়ে ফেলা। এসব বিষয় নিশ্চিত করা গেলে খেলাপি ঋণ কমে যাবে।

To read the full content on Orthosongbad, click here.